মব ভায়োলেন্স ও সামাজিক অবক্ষয়: আমাদের করণীয় কী?

Mob violence in Bangladesh

বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে মব ভায়োলেন্স এক ভয়াবহ ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। তুচ্ছ অজুহাতে বা নিছক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনো সভ্য সমাজের লক্ষণ হতে পারে না। এটি কেবল মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয়, বরং একটি রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।

মব ভায়োলেন্স কেন বিপজ্জনক? কারণ এখানে মানুষের কমন সেন্স কাজ করে না। তারা প্রমাণের ধার ধারে না। অন্ধ আক্রোশে মানুষ যখন বিচারকের ভূমিকা পালন করে, তখন অনেক ক্ষেত্রে নির্দোষ মানুষ প্রাণ হারায় এবং সমাজে দীর্ঘমেয়াদী আতঙ্ক ও ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ে। একটি আধুনিক ও উন্নত দেশ গড়তে হলে আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। অপরাধী যেই হোক, তাকে প্রচলিত আইনের আওতায় এনে বিচার করাই হলো ন্যায়বিচার।

আমরা এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে সকল ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির মানুষ পরম শ্রদ্ধায় একসাথে বসবাস করবে। বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি, বিভেদ নয়। অন্যের সংস্কৃতি বা বিশ্বাসের প্রতি সম্মান জানানোই হলো প্রকৃত শিক্ষার পরিচয়।

দুর্ভাগ্যবশত, সোশ্যাল মিডিয়ায় পিনাকি বা ইলিয়াসদের মতো কিছু উস্কানিদাতার বক্তব্য অনেক সময় সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আবেগপ্রবণ ও উস্কানিমূলক কথার ফাঁদে পা দিয়ে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়া মানেই নিজের অজান্তে দেশের ক্ষতি করা। তথ্য যাচাই না করে উত্তেজিত হওয়া এবং আইন হাতে তুলে নেওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।

আসুন, ঘৃণা ও সহিংসতার বিপরীতে যুক্তি, সহনশীলতা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সমাজ গড়ে তুলি। তবেই দেশ প্রকৃত উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url