সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টস

Human Psychological Facts

আমাদের প্রতিটি চিন্তাভাবনা শরীরের উপর গুরত্বপূর্ন প্রভাব ফেলে। আমরা যেভাবে চিন্তা করি আমাদের শরীরও সেভাবে রিয়েক্ট করে। ইতিবাচক চিন্তা শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে একইভাবে নেতিবাচক চিন্তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি যখন নিজেকে পরাজিত অনুভব করবেন, নিজেকে বোঝা মনে করবেন, আপনি অটোম্যাটিক পরাজিত বোঝাদের মত আচরণ করবেন। তাই জীবনে যা কিছুই ঘটুক না কেন, কখনও হতাশ হবেন না। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন, ভবিষ্যতের উপর আশা রেখে সময়ের সঠিক ব্যবহার করুন। উচ্ছাকাঙ্কা রাখা ভাল, এতে সফলতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

কোন কিছু লিখে চিন্তা করলে সেটি অনেক ইফেক্টিভ হয়।

আপনি নিজেকে যত বেশি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন তত বেশি ব্যার্থ হবেন। তার চেয়ে বরং ন্যাচারাল থাকায় ভাল। এতে করে আপনার প্রকৃত বৈশিষ্ঠ্যই ফুটে উঠে, যা অথেনটিক।

আমরা যখন নিজেদের পছন্দের পোশাক পরিধান করি তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। পছন্দের পোশাক পরে বাইরে গেলে নিজেকে মানসিকভাবে স্থির এবং সুখী মনে হয়। ফলে অন্যরাও আপনাকে সহজে পছন্দ করতে পারে।

ডিসিশন মেকিং এর ক্ষেত্রে চিন্তা করার সময়ে সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ করলে ব্রেইন অনেক ভাল কাজ করে এবং বেটার আউটকাম পাওয়া যায়। কারণ তখন অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় চিন্তা আপনার ব্রেইনকে ডিস্টার্ব করতে পারে না। যেমন আমি যখন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ করে চিন্তা করি তখন চিন্তাগুলো অনেক গোছানো হয়। 

আপনি ভবিষ্যতে যা হতে চান সেটি "আমি এটি হবো" এভাবে না বলে যদি "আমি কি এটি হতে পারবো?" যেমন - "আমি কি একজন গিটারিস্ট হতে পারবো?" এভাবে যদি নিজেকে প্রশ্ন করে বলেন তাহলে সেটি আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা দিবে। ট্রাই করে দেখতে পারেন। 

নিয়ম যতো কড়া সেটি ভেঙ্গে ফেলার প্রবণতাও বেশি। একইভাবে নিয়ম কিছুটা সহজ করে দিলে সেটি মেনে চলার প্রবণতাও বেশি হবে। তাই প্রথমে কাউকে খুব কড়া নিয়ম অনুসরণ করতে বলবেন না বা নিজের জন্যেও নিয়মগুলো কঠিন করে ফেলবেন না। ভোর পাঁচটায় যদি ঘুম থেকে উঠতে না পারেন তাহলে ভোর ছয়টায় উঠতে চেষ্টা করুন। প্রথমেই কঠিন ধাপে যাবেন না।

আমাদের স্বপ্নগুলো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ন মেসেজ বহন করে। যেগুলোর অর্থ উদ্ধার করতে পারলে জিবনের সমস্যাগুলো সমাধান করা অনেক সহজ হয়ে যায়। বয়স এবং স্থানভেদে মানুষের স্বপ্ন দেখার ধরনও ভিন্ন হতে পারে। কেউ যখন স্বপ্নে নিজের দাঁত পড়ে যেতে দেখে এর অর্থ হচ্ছে ব্যাক্তির আত্মবিশ্বাস হ্রাস পেয়েছে। ব্যাক্তির অবস্থানভেদে একই স্বপ্নের ব্যাখ্যা ভিন্ন হতে পারে। স্বপ্ন দেখার ১০ মিনিটের মধ্যেই আমরা প্রায় ৯০ শতাংশ ভুলে যাই। যারা বলে যে তারা স্বপ্ন দেখে না আসলে তারা স্বপ্ন মনে রাখতে পারে না।

আপনি যখন একটা ব্যাকআপ প্ল্যান রাখবেন তখন আপনার মূল প্ল্যানটিতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই যেকোন একটি লক্ষ্যে স্থির থাকাটা বেশি জরুরি।

মানুষের কমন একটি স্বভাব হচ্ছে অন্যের নিকট কখনও ঋণগ্রস্ত থাকতে চায় না। সে নানা উপায়ে তা ফেরত দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়ে। তবে বন্ধুদের ব্যাপারে ভিন্ন কথা। এরা টাকা ধার নিয়ে তা কখনও শোধ করতে চায় না। যদিও এটা একটা সাধারণ বিষয় কারণ বন্ধুর নিকট তো একটু ঋনি থাকায় যায়। তাই না? 

পড়াশোনার পাশাপাশি বিষয়টি বাস্তবে টেস্ট করে দেখলে লার্নিংটা অনেক বেশি ইফেক্টিভ হয়। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থার অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে এখানে ছাত্রছাত্রীদের হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়ার বদলে মুখস্থ বিদ্যাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে একজন শিক্ষার্থী ১২-১৬ বছর পড়াশোনা করেও উৎপাদনশীল কোন কাজ করতে পারে না। একজন মানুষ যতই ব্রিলিয়ান্ট হোক না কেন সে যদি কোন কিছু উৎপাদন না করে তাহলে তার ভ্যালু শূন্য। সেক্ষেত্রে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের কোডিং শেখানো একটি ভাল সিদ্ধান্ত হতে পারে।

এই মুহুর্তে যে জিনিসটা আমাদের কাছে নেই সেটিকে আমরা অধিক মুয়ল্যান করে থাকি। কিন্তু জিনিসটি পেয়ে গেলে সেটির তেমন একটা মূল্য থাকে না। আবার নতুন একটি আকাঙ্কা তৈরি হয়।

আমরা যখন কোন একটি প্যাটার্ন দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে এর একটি অর্থ খুঁজে সমাধান বের করার চেষ্টা করে। ফলে আমরা জড় বস্তুর মধ্যেও মানুষের মুখের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়, একই কারণে আমরা মেঘে নানারকম আকৃতি দেখতে পাই। আমরা সবসময় নতুন নতুন সমস্যা খুঁজে পাই কারণ কাজটি আমাদের মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে থাকে।

মানুষের জীবনে দুঃখ কষ্ট থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যখন আপনার আর কিছুই করার থাকবে না তখন কিছুক্ষণ কান্না করে নিন। কান্না করলে মানসিক স্থিরতা আসে। শরীর ও মন কিছুটা হালকা অনুভব হয়। এই সময় প্রার্থনা করলে তা বেশি কার্যকরি হয়। 

কোন রকম যুক্তি প্রমাণ নেই তবুও একজন মানুষ কোন একটি বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারে। মাঝেমধ্যে এরকম শক্তিশালী অনুমান আমাদের অবচেতন মন প্রডিউস করতে পারে। এটাকে বলে ইন্টুইশন।

একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি নিজের জ্ঞান নিয়ে অহংকার করেন না। প্রকৃত জ্ঞানী লোক মনে করে সে অনেক কম জানে এবং সবসময় নতুন কিছু জানার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকে। অন্যদিকে মুর্খ লোকেরা নিজেদের অনেক স্মার্ট মনে করে এবং তারা ভাবে তাদের সব কিছু জানা হয়ে গেছে।

মস্তিষ্কের যে অংশে আপনি শারীরিক ব্যাথা অনুভব করেন ঠিক একই অংশে একাকীত্ব অনুভব করেন। প্রত্যাখ্যানের অনুভূতি শুধু মানসিকভাবেই কষ্টদায়ক নয় এটি শারীরকভাবেও সমান ইফেক্ট ফেলে। গবেষয়নায় দেখা গেছে শারীরিক ব্যাথা পেলে মস্তিষ্কের যে অংশ সক্রিয় হয়ে উঠে মানসিক আঘাত পেলেও একই ঘটনা ঘটে। 

একটি বোরিং কাজের জন্য পুরস্কার প্রাপ্তির ব্যাবস্থা করা হলে কাজটি অনেক ইন্টারেস্টিং হয়ে উঠে। আপনি নিজেকে নিজেও পুরস্কার দিতে পারেন। যেমন নিজেকে মনে মনে বলতে পারেন একটা বই সম্পূর্ন পড়ে শেষ করতে পারলে আপনি একটি ডার্ক চকলেট খাবেন। এভাবে কন্টিনিউ করতে পারলে দেখবেন খুব দ্রত সময়ের মধ্যে একটি বোরিং কাজ কমপ্লিট করে ফেলেছেন।

অন্যকে ছোট করার মাধ্যমে রসিকতা করা সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন ইন্টারনেট ট্রলের পিছনে মূল কারণ শুধুমাত্র হাস্যরসই নয় এগুলোর বেশিরভাগই পরশ্রীকাতর, অহংকারী, হতাশাবাদি লোকদের কাজ।

বর্তমানে একজন স্কুল স্টুডেন্টকে যে পরিমাণ মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সমপরিমাণ মানসিক চাপের জন্য ১৯৫০ সালে একজন মানুষকে মানসিক রোগী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এর মানে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের মানসিক চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে।

আপনি সোশাল মিডিয়ায় আসক্তি অনুভব করেন কারণ এটা এভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে। সোশাল মিডিয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনার এটেনশন এবং আপনার সময় নিয়ে নেওয়া। আপনার মনোযোগ এবং মূল্যবান সময়কে পণ্য করেই তারা বিজনেস করে থাকে। 

কিছু মানুষ এমনভাবে জীবন যাপন করে যেন তাদেরকে সবসময় টিভি শো'তে দেখানো হচ্ছে এবং তারা সেই টিভি শো'এর একটি অন্যতম ক্যারেক্টার। এটি একটি মানসিক ব্যাধি।

এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট ড্রাগসমূহ শুধুমাত্র যৌন ক্ষমতাই হ্রাস করে ফেলে না, এটা ছাড়াও অনেক বেশি সাইড ইফেক্ট ফেলে। যেমন - অন্যের প্রতি প্রেম, ভালবাসার মত সুন্দর অনুভূতিগুলোও কমিয়ে ফেলে।

প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের মনের উপর গুরুত্বপূর্ন প্রভাব ফেলে। যখন আপনার জীবনে একঘেয়েমি চলে আসে তখন আপনি সমুদ্র দেখার কথা চিন্তা করেন, কারণ সামুদ্রিক পরিবেশ আমাদের মনকে শান্ত করে।  সবুজ গাছপালা দেখলেও আমাদের মন শান্ত হয়, অফিসে বা বাসায় টবে গাছপালা রাখলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। তাই মানসিক শান্তির জন্য ভাল পরিবেশে বসবাস করা জরুরি।

একটা জিনিস কিছুদিন ব্যবহার করলে সেটির উপর আমাদের মায়া বসে যায়, তখন সেটি আমাদের জিবনেরই একটি অংশ হয়ে উঠে। আপনার কোন জিনিস নষ্ট হয়ে গেলে এর দামের জন্য যত বেশি খারাপ লাগে তার চেয়ে বেশি খারাপ লাগে জিনিসটার প্রতি মায়ার কারণে। একই কারণে বিক্রেতা সেকেন্ডহ্যান্ড জিনিসের দাম সবসময় অতিরিক্ত আশা করে। 

যে ঘটনাগুলোর সাথে ইমোশন জড়িত থাকে সেগুলো আমাদের স্মৃতিতে অনেক বেশি সময় স্থায়ী হয়। এরকম কোন ঘটনা আপনি ইচ্ছা করলে ভুলে যেতে পারবেন না। তবে যে স্মৃতিগুলো আমাদের জীবনে চলার জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে সেগুলো ব্রেইন ধীরে ধীরে মুছে ফেলে।

ঝামেলাকে এড়িয়ে গেলে আপনি কখনো ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন না। বরং ঝামেলাকে স্বেচ্চায় গ্রহণ করে নিলে, ঐ সিচুয়েশনে আপনি এমন কিছু শিখবেন, যা আপনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

আপনি যদি ফেসবুকের বায়োতে বা প্রোফাইলে নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি আপনার পার্সোনাল লাইফেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ আমাদের ব্রেইন যেটা বারবার দেখে সেটাকেই সত্যি বলে ধরে নেয়। 

যেসব ব্যাক্তি মৃত্যুর পর পরকালে জীবনে বিশ্বাস করেন তারা, যারা পরকালে বিশ্বাস করেন না তাদের চেয়ে অস্তিত্ব সংক্রান্ত উদ্বিগ্নতায় কম ভুগে। অর্থাৎ যারা সংশয়বাদী, নাস্তিক, নিহিলিস্ট, তারা আস্তিকদের তুলনায় জীবনে নিয়ে বেশি হতাশায় ভুগেন।

মন খারাপ থাকলে খারাপ লাগার বিষয়টি যদি কাগজে লিখে সেটি মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিন তাহলে কিছুটা হাল্কা অনুভব করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url