আত্মহত্যা

Suicide

রাফসান ইদানীং খুব একাকীত্বে ভুগছে। আশেপাশে এত মানুষ তবুও যেন সে খুব একা। রাফসানের মনে হয় - কেউ তাকে বুঝতে পারে না। কেউ তাকে ভালোবাসে না। কেউ তাকে গুরুত্ব দেয় না। পরিবারেও নিজেকে আজকাল বোঝা মনে হয়। রাফসান ভাবে - যে বয়সে তার একটা চাকরি থাকার কথা, সংসার থাকার কথা, মা বাবার সেবা করার কথা, সে বয়সে তাকে বেকার জীবন কাটাতে হচ্ছে। এই আবেগটা তাকে কষ্ট দেয়। সে চিন্তা করে - "এইভাবে বেঁচে থাকার কোনো মানে হয় না, তার চেয়ে বোধয় একেবারে মরে যাওয়াটাই ভালো হবে"। 

এমন একটা সময়ে তার জীবনে আসে লিসা। লিসা খুব সুন্দর একটা মেয়ে। লিসাকে প্রথম দেখেই রাফসানের ভালো লাগে। রাফসান লিসাকে বলে- "আমি একটি শূণ্য খাঁচা, যে একটি পাখির খোঁজে আছি"। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের মত একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। তারা মাঝেমধ্যে জীবন ও জগৎ নিয়ে গভীর দার্শনিক আলোচনা করে। লিসার কথা শুনে রাফসান বুঝতে পারে লিসার জীবনেও অনেক সমস্যা রয়েছে। তারা দুইজনেই আসলে দুইটা ডানা ভাঙ্গা কাউয়া। এই জীবন তাদের সাথে ন্যায়বিচার করেনি।

একদিন বিকালে রাফসান ব্রিজের রেলিঙয়ে বসে থাকে। উপরে ঘুটঘুটে কালো মেঘ। বৃষ্টি হতে পারে। নিচে নদী বয়ে চলছে। নদীর মায়া ডাকছে রাফসানকে। সে মায়ায় সাড়া দিবে রাফসান। শেষবারের মত আকাশ বাতাস আর চারপাশটা একটু দেখে নিলো। কিন্তু কিছুই তার ভালো লাগছে না। রাফসান ব্রিজ থেকে লাফ দিতে যাবে ঠিক এমন সময় একটা কল আসে তার ফোনে। লিসার ফোন। "রাফসান আমার একটা হেল্প লাগবে। তুমি কি একটু আসবে? খুব দরকার।"

রাফসানের মনে হলো আজ থাক, অন্য একদিন নদীর ডাকে সাড়া দেওয়া যাবে, এখন লিসার হেল্প দরকার, আগে তার কাছে যাই। 

রাফসান ছুটে যায় লিসার কাছে। লিসা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। সে একদম ভেঙ্গে পড়েছে। সে সব কথা বলতে চায় রাফসানকে। রাফসান তার কথাগুলো সহমর্মিতার সাথে মনোযোগ দিয়ে শুনে। রাফসানের সাথে কথা বলার পর লিসা অনেকটা হাল্কা অনুভব করে। রাফসানের উপলব্দি হয় - অন্যের পাশে থাকাটাই হয়তো জীবনকে অর্থপূর্ন করতে পারে। 

সেদিনের পর থেকে রাফসানের জীবনটাও বদলে যায়। সে সিদ্ধান্ত নেয় আর পালিয়ে বেড়াবে না জীবনের কাছ থেকে। এবার তাকে ঘুরে দাড়াতে হবে। রাফসান মানুষের পাশে থাকতে শুরু করে, মানুষকে ছোট ছোট কাজে সাহায্য করে, স্বেচ্ছাসেবক হিশাবে কাজ করে, মানুষের কথা শোনে, মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়ে তাদের জীবনে চলতে সাহস দেয়। রাফসান ভালো কাজের মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নিজের জীবনটা গুছিয়ে নিতে থাকে ধীরে ধীরে। আত্মহত্যার চিন্তা কুয়াশার মত মিলিয়ে যায় তার মাথা থেকে। এখন সে জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখে। মনে আশা রাখে একদিন বড় কিছু করবে। 

রাফসান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে মনে মনে বলে - "জীবনে কারো জন্য কিছু করতে পারটাই হলো স্বার্থকতা।"

—o—

Life is really simple, but we insist on making it complicated. Don't be serious about life. It's just a play.

— Osho

বর্তমান বিশ্বে আত্মহত্যা একটি সিরিয়াস সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে বিশ্বে একজন মানুষ আত্মহত্যা করেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ভয়াবহ একটি পরিস্থিতি। আজ আমরা এই লেখায় আত্মহত্যা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো।

আত্মহত্যা একটি অস্বাভাবিক আচরণ। ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন শেষ করাই হলো আত্মহত্যা। সাধারণত মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় তখন, যখন তারা বেঁচে থাকার আর কোনো উপায় খুঁজে পায় না, জীবনের ভার অসহনীয় হয়ে ওঠে, কিংবা তারা নিজেদের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। অনেক সময় তারা জীবনে কোনো অর্থ বা উদ্দেশ্য খুঁজে পায় না, সবকিছু অর্থহীন ও শূন্য বলে মনে হয়। এই মানসিক অবস্থায় ব্যক্তি ধীরে ধীরে নিঃসঙ্গতা, হতাশা ও গভীর অসহায়ত্বের মধ্যে হারিয়ে যায়। যখন তারা বেঁচে থাকার আর কোনো আশা খুঁজে পায় না, তখন তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

সাধারণভাবে আমরা প্রায়ই দেখি কেউ পরীক্ষায় ফেল করলে, সম্পর্কের বিচ্ছেদে ভুগলে, বা বেকারত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু এটি পুরোপুরি সঠিক নয়। বাস্তবতা হলো—এই ধরনের ঘটনা আসলে ট্রিগার মাত্র, মূল সমস্যা আরও গভীরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার পেছনে আগে থেকেই থাকা মানসিক অসুস্থতা, যেমন দীর্ঘমেয়াদি হতাশা বা মানসিক যন্ত্রণা কাজ করে। সেই অভ্যন্তরীণ কষ্টই মানুষকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে তোলে এবং যখন কোনো বড় বা ঝাঁকুনি দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে, তখন সে আর তা সামলাতে পারে না। ফলে, সেই চাপের মুখে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। উদাহরণ হিশাবে বলা যায়—মাঝারি আকারের ভূমিকম্পে যেসব ভবন দুর্বল, সেগুলো ভেঙে পড়ে; কিন্তু যেসব ভবন মজবুতভাবে তৈরি, সেগুলো টিকে যায়। তেমনি, যাদের মানসিক ভিত আগে থেকেই দুর্বল থাকে, তারাই জীবনের সংকটে ভেঙে পড়ে। তাই আত্মহত্যাকে শুধুমাত্র কোনো একটি ঘটনার ফলাফল হিসেবে দেখা ভুল হবে; যেমন পরীক্ষায় ফেইল করার কারণে কেউ আত্মহত্যা করেছে এই বক্তব্য সঠিক নয়, বরং এটি দীর্ঘদিনের মানসিক যন্ত্রণার পরিণতি।

আত্মহত্যার পেছনে নানা ধরনের কারণ কাজ করে, যার মধ্যে মানসিক, সামাজিক ও জৈবিক উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক কারণে আত্মহত্যার প্রবণতায় ডিপ্রেশন একটি প্রধান ভূমিকা রাখে। যারা দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছে কিংবা যাদের ব্যক্তিত্বজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। সামাজিক দিক থেকে দেখলে দেখা যায়, যাদের পরিবারে স্থায়ী সমস্যা আছে বা যারা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। মানুষ যখন নিজেকে একা, অবহেলিত বা অপ্রয়োজনীয় মনে করে, তখন আত্মহানির চিন্তা আরও প্রকট হয়। অর্থনৈতিক সংকটও আত্মহত্যার একটি বড় কারণ। আর্থিক অনিশ্চয়তা, ঋণের চাপ, বেকারত্ব মানুষকে চরম হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। অন্যদিকে, আত্মহত্যার জৈবিক কারণগুলোর মধ্যে জেনেটিক সমস্যা ও মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা উল্লেখযোগ্য। এসব ক্ষেত্রে সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে ব্যক্তির আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়।

বেশিরভাগ মানুষই আত্মহত্যার পূর্বে কিছু না কিছু সংকেত দিয়ে যায়, যদিও অনেক সময় তা স্পষ্ট নয়। কেউ কেউ সরাসরি, আবার কেউ ইশারা-ইঙ্গিতে আত্মহত্যার কথা প্রকাশ করে। কথাবার্তার মাঝে হঠাৎ অপ্রাসঙ্গিকভাবে জিজ্ঞেস করে বসে— “আচ্ছা, আত্মহত্যা করা কি খুব খারাপ?” অথবা বিদায়ের সময় এমনভাবে বিদায় নেয় যেন এটা জীবনের শেষ দেখা। আগে যে বিষয়গুলোতে আগ্রহ ছিল, সেগুলোর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। অতিরিক্ত মাদক গ্রহণ, অপরাধবোধে ভোগা, অথবা নিজেকে সমাজ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা— এসব আচরণও সতর্ক সংকেত হতে পারে। অনেকে নিজের প্রিয় জিনিসগুলো অন্যের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যায়। আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি কিংবা সূক্ষ্মভাবে মৃত্যু সম্পর্কিত পোস্ট করে। এগুলো ছাড়াও মানুষ ভিন্ন ভিন্নভাবে তার বিদায়ের আভাস দিয়ে যায়। এইসব সিগনাল যদি সময়মতো নোটিস করে হেল্প করা যায়, তাহলে একজন ব্যক্তিকে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।

আমাদের সমাজে আত্মহত্যা নিয়ে কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা রয়েছে, যা সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। যেমন—অনেকে মনে করেন, আত্মহত্যা নিয়ে কথা বললে ঝুঁকি বাড়ে; যারা আত্মহত্যার কথা বলে, তারা কখনোই তা করে না; কিংবা আত্মহত্যা শুধুমাত্র দুর্বল মনের মানুষের কাজ। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সহানুভূতিশীল ও সচেতনভাবে কথাবার্তা বললে আত্মহত্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার আগে মানুষ কোনো না কোনোভাবে সংকেত দেয়। হোক তা কথা, আচরণ কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের মাধ্যমে। আত্মহত্যার চিন্তা যে কারও মনে, যে কোনো সময় আসতে পারে, কারণ এটি মূলত তীব্র মানসিক যন্ত্রণা বা নিরুপায় অবস্থার বহিঃপ্রকাশ। তাই আত্মহত্যা নিয়ে যত বেশি সচেতনতা ও খোলামেলা আলোচনা করা যায়, তত বেশি মানুষ সময়মতো সাহায্য পেতে পারে এবং একটি মূল্যবান জীবন রক্ষা পেতে পারে।

আত্মহত্যা প্রবণ অনেক মানুষই নিজের চেষ্টায় সহায়তা খুঁজে পায় না, কারণ সে সময় তাদের মানসিক অবস্থা স্বাভাবিক থাকে না। ডিপ্রেশন, অসহায়ত্ব বা মানসিক যন্ত্রণায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে, যার ফলে তারা সঠিক সমাধান বা সহায়তার পথ এড়িয়ে চলে যায়। অনেক সময় তারা জানেই না কোথায় গেলে সহায়তা পাওয়া যাবে, কিংবা সহানুভূতির অভাবে সেই পথটি তাদের কাছে দূর ও অস্পষ্ট মনে হয়। ফলে তারা নিজের কষ্ট নিয়ে একাকীত্বে ডুবে যেতে থাকে এবং ধীরে ধীরে আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। অথচ যদি তারা সময়মতো সঠিক সহায়তার জায়গা খুঁজে পেত, কিংবা কেউ তাদের সেই পথ দেখিয়ে দিত—তাহলে হয়তো আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছাত না। তাই আশেপাশের মানুষদের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যদি পরিবারের কোনো সদস্য বা বন্ধু আত্মহত্যার সংকেত দেয়, তাহলে প্রথমে সহানুভূতির সাথে তার কথা শোনা খুব জরুরি। তাকে বিচার বা সমালোচনা না করে মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন সে আসলে কী বলতে চায়। ঝুঁকির লক্ষণ স্পষ্ট হলে সরাসরি জিজ্ঞেস করুন, “তুমি কি আত্মহত্যার কথা ভাবছো?”— এতে তার মানসিক অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়। তাকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে উৎসাহ দিন এবং সেই প্রক্রিয়ায় পাশে থাকুন। ব্যক্তির আশেপাশের পরিবেশ নিরাপদ রাখা দরকার— যেমন ক্ষতিকর ওষুধ, ধারালো বস্তু বা আত্মহানির সম্ভাব্য উপকরণ দূরে সরিয়ে রাখা। তাকে বোঝান, তার জীবনে এমন মানুষ আছেন যারা তাকে ভালোবাসে, যাদের কাছে সে গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় সামান্য সহানুভূতি, মনোযোগ বা ভালোবাসাই একজন হতাশ মানুষকে জীবনে ফিরে আসার সাহস দেয়। মানুষ চায় কেউ তাকে বুঝুক, একটু গুরুত্ব দিক, আর সেটুকু পেলেই অনেক সময় সে বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পায়।

যদি আপনার নিজের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়, তাহলে এটি উপেক্ষা না করে সময়মতো পেশাদার সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কাউন্সেলিং, থেরাপি বা প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ — এইসব পদক্ষেপ আপনাকে অনেকটাই ভারমুক্ত করতে পারে। পাশাপাশি, বিশ্বস্ত কাউকে নিজের মনের কথা খোলামেলা ভাবে বলুন। নিজেকে একা করে রাখবেন না। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, মেডিটেশন, কিংবা শখের কোনো কাজে যুক্ত থাকা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলো শক্তিশালী রাখার চেষ্টা করুন। ভালো সম্পর্ক জীবনে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিপদে পড়লে সাহায্য চান। নিজের মনের কথাগুলো কারো সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে মনকে যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে ফেলুন। সমাজে আপনার গুরুত্ব রয়েছে। এটা আপনার কল্পনার চেয়েও বেশি। আপনি এখন যে কঠিন সময় পার করছেন, তা চিরস্থায়ী নয়। জীবন অনেক মূল্যবান এবং আপনি চাইলে এটিকে বদলে দিতে পারেন — আপনার ভেতরে সেই শক্তি আছে। শুধু প্রয়োজন একটু ধৈর্য, মনোযোগ ও আত্মবিশ্বাস। আপনার জীবন এটাকে ভালো রাখার দায়িত্ব একান্তই আপনার। বেঁচে থাকাটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিশাবে নিন।

এছাড়াও আপনি সাপোর্ট হেল্পলাইন কল করতে পারেন। বাংলাদেশে এখন বেশ কিছু জরুরি মানসিক সহায়তা সেবা রয়েছে, যেখান থেকে আপনি সহযোগিতা নিতে পারেন। আপনি সরাসরি কল করতে পারেন "কান পেতে রই" বা "দ্য পার্পললাইন" হেল্পলাইনে, তাদের প্রশিক্ষিত প্যরা-কাউন্সেলরগণ আপনার মানসিক যন্ত্রণা কমাতে সহমর্মিতা এবং দক্ষতার সাথে আপনার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে আগ্রহী। 

এর পাশাপাশি, আপনি নিজেকে সাময়িক মানসিক স্থিতি ফিরিয়ে দিতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, মেডিটেশন কিংবা গ্রাউন্ডিং টেকনিক (যেমন—আশেপাশের জিনিস খেয়াল করা বা বিভিন্ন শব্দ মনোযোগ দিয়ে শোনা) প্র্যাকটিস করতে পারেন। যদি পরিস্থিতি গুরুতর হয়, তাহলে আপনি কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট বা থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন, কিংবা সরাসরি ঢাকার পিজি হাসপাতাল (BSMMU) বা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বহির্বিভাগ থেকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারেন।

আরেকটি কথা মনে রাখবেন— "আত্মহত্যা কখনোই সমাধান নয়, বরং এটি সাময়িক অনুভূতি থেকে নেয়া স্থায়ী একটি পদক্ষেপ।" সহযোগিতা চাওয়া দুর্বলতা নয়, এটি সাহসিকতার পরিচয়। দুনিয়া অনেক জটিল সিস্টেমে কাজ করে। এখানে মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে যার উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। লাইফ ইজ নট ফেয়ার। সবসময় ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না। তবে এসবের মধ্য থেকেই আপনাকে জিতে আসতে হবে। লাইফের এই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়েই আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে। তাহলে জীবন অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

মনে রাখবেন, জীবন কোনো সমস্যা নয় যে এটাকে সমাধান করতে হবে, এইটা হলো একটা রহস্য, বেঁচে থাকতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url